নিম পাতার অজানা ১৫টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা সহ নিম পাতার সকল অজানা তথ্য জানতে পারবেন এই পোস্ট থেকে। নিম পাতা অনেক উপকারি আমাদের শরীরের জন্যে তবে এর সঠিক ব্যবহার করতে হবে নায়লে এটি শরীরের জন্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। আসুন নিম পাতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেনি।
নিম পাতা একটি বহুবিধ ওষুধি গাছ যা দক্ষিন এশিয়ার প্রকৃতিতে অনেক পরিচিত। নিমগাছের প্রত্যেকটি অংশকে কাজে লাগানো যায় মানুষের উপকারের জন্যে তবে অবশ্যই সঠিক ভাবে সঠিক পরিমানে ব্যবহার করতে হবে। আসুন নিম পাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জেনেনি।
সুচিপত্রঃ নিম পাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতাউপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন এই পোস্ট থেকে। নিম পাতার মতো নিমগাছের
প্রত্যেকটি অংশকে কাজে লাগান সম্ভব। প্রাচিন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নিম পাতাকে
সর্বরোগ নিবারিনী বলা হয়। অর্থাৎ এটি এমন এক ধরনের উপকারি উপাদান যা নানান বা সব
রকমের রোগ নিরাময়ে সক্ষম। নিম পাতার স্বাদ তিক্ত হলেও এর অগনিত স্বাস্থ্য
উপকারিতা রয়েছে। প্রাচিন কাল থেকে এখন আধুনিক বিজ্ঞানেও নিম পাতার কার্যকারিতা
প্রমানিত। আসুন নিম পাতার উপকারিতা গুলো জেনেনি।
ত্বকের যত্নেঃ
- ব্রন, একজিমা এবং চুলকানির মতো ত্বকের সমস্যায় নিমপাতা অনেক কার্যকর
- ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর করে
- ত্বকের প্রদাহ কমায়
- অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুনের কারণে যেটি যেকোনো সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
রক্ত পরিশোধনঃ
- নিমপাতা রক্তকে বিশুদ্ধ করে বা বিষমুক্ত করে
- শরীরের ভিতরের সিস্টেম পরিষ্কার রাখে
- লিভার এবং কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ
- নিমপাতা রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- ইনসুনিল এর কার্যকারিতা বাড়ায়
প্রদাহ বা ব্যাথা উপশম করেঃ
- জ্বরের কারণে সৃষ্ট প্রদাহ কমাতে কার্যকর
- আর্থাইটিস কারণে সৃষ্ট প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে
- এটি মান্সপেশি এবং জয়েন্টের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে
ম্যালেরিয়া এবং ভাইরাস প্রতিরোধঃ
- নিমপাতার তিক্ততা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে কার্যকর
- নিমপাতা ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া দারা সৃষ্ট রোগ প্রতিরোধ করে
ক্যান্সার প্রতিরোধকঃ
- নিমপাতায় থাকা শক্তিশালি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কান্সারের কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে
পরিপাকত্রন্ত্রের উন্নতিঃ
- হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
- গ্যাস্ট্রিক এবং পেটের প্রদাহ কমায়
চুলের যত্নেঃ
- চুল পড়া রোধে নিমপাতা কার্যকর
- চুলের খুশকি দূর করে
- চুলের গোড়া মজবুত করে
- চুলের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে
মুখের স্বাস্থ্যঃ
- দাতের মাড়ি শক্তিশালী করে
- মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
- দাতের ক্ষয় প্রতিরধে নিম দাঁতনের ব্যবহার করতে পারেন
প্রাকৃতিক কীটনাশকঃ
- নিমপাতা কৃষিক্ষেত্রে কীটনাশক হিসেবে ব্যবহিত হয়
- জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করে
- ক্ষতিকারক পোকামাকড় দূর করে
পরিবেশগত উপকারিতাঃ
- নিমগাছ বায়ুদূষণ কমায়
- পরিবেশ বিশুদ্ধ করে
- পোকামাকড় প্রতিরোধে নিমপাতা অনেক সাহায্য করে
অন্যান্য উপকারিতাঃ
- নিমপাতা দিয়ে তৈরি তেল এবং প্রসাধনী দেহের যত্নে ব্যবহার করা যায়
- এটি ঘরের মশা ও অন্যান্য পোকা দূর করতে সাহায্য করে
- নিমপাতা দিয়ে তৈরি পানিয় খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
নিমপাতা আমাদের জন্যে অনেক উপকারি। শুধু শারীরিক ভাবে নয় প্রাকৃতিক এবং
দৈনন্দিন জিবনে বিভিন্ন ভাবে উপকার দিয়ে থাকে। আদিকাল থেকে মানুষ বর্তমানেও
নিমপাতাকে বিভিন্ন ওষুধি কাজে ব্যবহার করে যাচ্ছে। নিমপাতা বা নিমগাছ
প্রকিতির একটি অমূল্য সম্পদ, যেটা সঠিক ভাবে ব্যবহার করে আমরা আরও সুস্থ হয়ে
উঠতে পারি এবং পরিবেশবান্ধব ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারি।
খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়
খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয় জানবেন এই পোস্ট থেকে। প্রাচীনকাল থেকে নিম
পাতাকে প্রাকৃতিক ফার্মেসি বলা হয়। এর স্বাদ তিক্ত হলেও অনেক উপকারি গুণ রয়েছে।
খালি পেটে নিম পাতার রস পান করা অনেক স্বাস্থ্যকর এবং কার্যকরি পদ্ধতি।শরীরের
বিভিন্ন উপকারে খালি পেটে নিম পাতার রস খাওয়া উচিত। নিম পাতার রস তাদের জন্যে
উপকারি যারা ত্বকের সমস্যা, ডায়াবেটিস বা পরিপাকত্রন্তের জটিলতায় ভুগছেন। আসুন
বিস্তারিত জেনেনি।
রক্ত পরিশোধনঃ
- নিমপাতা রক্তকে বিশুদ্ধ করে বা বিষমুক্ত করে
- শরীরের ভিতরের সিস্টেম পরিষ্কার রাখে
- লিভার এবং কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ
- নিমপাতা রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- ইনসুনিল এর কার্যকারিতা বাড়ায়
ত্বকের যত্নেঃ
- ব্রন, একজিমা এবং চুলকানির মতো ত্বকের সমস্যায় নিমপাতা অনেক কার্যকর
- ত্বকের বিভিন্ন দাগ দূর করে
- ত্বকের প্রদাহ কমায়
- অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুনের কারণে যেটি যেকোনো সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়
পরিপাকত্রন্ত্রের উন্নতিঃ
- হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
- গ্যাস্ট্রিক এবং পেটের প্রদাহ কমায়
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ
- নিম পাতার রস অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল গুনাবলি সম্পুর্ন, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- এটি সর্দি কাশি এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ
- নিমপাতার রস মেটাবোলিজম বৃদ্ধি করে
- ফ্যাট বার্ন করতে সাহায্য করে
- এটি অতিরিক্ত চর্বি জমাতে বৃদ্ধি করে
কিডনি ও লিভারের যত্নঃ
- লিভার ও কিডনি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে
- এটি অভ্যান্তরিন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা উন্নত করে
আরও পড়ুনঃ বাদাম শেক এর ১০টি অজানা উপকারিতা
আপনি ওপরের উপকারিতা ভোগ করতে পারবেন খালি পেটে নিম পাতার রস
খাওয়ার ফলে। নিম পাতা জলে সিদ্ধ করে সকালে খালি পেটে খেতে
পারেন। নিম পাতায় অনেক রকমের ভিটামিন মিনারেল ও অ্যান্টি
অক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্যে অনেক উপকারি এবং
বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে। আপনি যদি ঘরোয়া এবং প্রাকিতিক
পদ্ধতিতে সুস্থ এবং রোগ মুক্ত থাকতে চান তাহলে খালি পেটে নিম
পাতার রস হবে সবথেকে কার্যকর উপাদান।
নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানবেন এই পোস্ট থেকে। নিম
পাতার রস প্রাকৃতিক স্বাস্থ্যরক্ষার ক্ষেত্রে একটি অমূল্য
উপাদান। তবে সঠিক উপকার পাওয়ার জন্যে অবশ্যই নিয়ম মেনে নিম
পাতার রস খেতে হবে। এই রসের তিক্ত স্বাদ এবং শক্তিশালি
কার্যকারিতা সম্পুর্ন পাবার জন্যে সঠিক নিয়ম মেনে খাওয়া জরুরি।
সঠিক নিয়মে নিম পাতার রস না খেলে এর পার্শপ্রতিক্রিয়া দেখা
দিতে পারে। আসুন বিস্তারিত জেনেনি নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
সম্পর্কে।
- পাতা সংগ্রহঃ তাজা নিম পাতা সংগ্রহ করুন। পাতাগুলো অবশ্যই সুস্থ ও পরিস্কার হতে হবে
- পাতা ধুয়ে পরিস্কার করুনঃ নিম পাতা ভালভাবে ধুয়ে নিন যাতে ময়লা বা কেমিক্যাল দূর হয়।
- পাতার রস প্রস্তুত করাঃ একটি পাত্রে ১০ থেকে ১৫ টি নিম পাতা রেখে পানির সাথে মিশিয়ে ভালো ভাবে ব্লেন্ড করতে হবে। অথবা নিম পাতা গুরা করে সেটি পানির সাথে মিশাতে পারবেন মিশিয়ে রস তৈরি করতে পারবেন।
খাওয়ার নিয়মঃ
- প্রতিদিন সকালে ১ থেকে ২ চামচ নিম পাতার রস পান করুন
- বেশি তিক্ত লাগলে পানি বা মধু মিশিয়ে খেতে পারেন তবে স্বল্প পরিমানে
- এক টানা বেশিদিন খাবেন না প্রয়জনে ৭ থেকে ১০ দিন একটানা খাবেন এবং এরপর আবার বাদ দিয়ে প্রয়োজন হলে আবার শুরু করতে পারেন।
ওপরের নিয়ম ব্যবহার করে নিম পাতার রস খেতে পারেন। তবে এর
উপকারি গুণ যেনে অধিক পরিমানে খাওয়া ঠিক হবে না। এছাড়া এমন
পাতার রস খাওয়া জাবেনা যা ভাইরাস যুক্ত বা নষ্ট হয়ে গেছে বা
মরে গেছে। স্বাস্থ্যগত সুবিধা পেতে নিয়মিত এবং সথিকভাবে নিম
পাতার রস খেতে হবে। অবশ্যই ওপরের নিয়ম মেনে বা ওপরের পদ্ধতি
অবলম্বন করে খাওয়া উচিত।
নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয়
নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয় জানবেন এই পোস্ট থেকে। নিম পাতা
আমাদের সাস্থের জন্যে অনেক উপকারি এটা হয়তো আপনারা ইতোমধ্যে
জানেন, তবে অনেকেই জানেন না নিম পাতার তৈরি বড়ি খেলে কি উপকার
হয়। মুলত নিম পাতা থেকে তৈরি প্রত্যেকটি জিনিস বা জে কাজে
ব্যবহার করবেন সেটি থেকেই উপকার পাবেন। তবে সঠিক ভাবে এর
ব্যবহার করতে হবে। আসুন জেনেনি নিম পাতার বড়ি খেলে কি
হয়।
- রক্ত পরিশোধনঃ নিমের বড়ি রক্ত পরিশোধনে সাহায্য করে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে ভালো ফলাফল দিতে পারে।
- অ্যান্টি-ব্যকটেরিয়াল গুণঃ এটি জিবানু নোশক হিসেবে কাজ করে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ জাতিয় রোগ থেকে রক্ষা করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ নিমের বড়ি রক্তে শর্করার পরিমান নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হয়।
- ত্বকের সমস্যা দূরীকরণেঃ ব্রন, ফুসকুড়ি বা ত্বকের নানা সমস্যা কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- পরজীবী নির্মূলঃ অন্ত্রের পরজীবী দূর করতে সাহায্য করে
ওপরের উপকারগুলো পাবেন নিম পাতার বড়ি খাওয়ার ফলে। তবে অবশ্যই
নিয়ম মেনে বা সঠিক পরিমানে এটি খাওয়া উচিত নয়তো এর
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। নিমপাতার বড়ি অতিরিক্ত
খাওয়া যাবে না এবং গরভবস্থায় খেতে হলে অবশ্যই ডাক্তারের
পরামর্শ নিতে হবে। যারা সংবেদনশীল বা নিমে যাদের অ্যালার্জি
রয়েছে তাদের নিম পাতার বড়ি থেকে বিরত থাকা উচিত নয়তো সমস্যা
দেখা দিতে পারে। যদি কোন নির্দিষ্ট কারণে বা অসুখ প্রতিকারের
জন্যে নিম পাতার বড়ি খেতে চান তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের
পরামর্শ নিতে হবে।
নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা
নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা সম্পর্কে জানবেন এই পোষ্ট
থেকে। প্রাচীনকাল থেকে নিম পাতা ওষুধি হিসেবে ব্যবহার হয়। নিম
পাতার প্রত্যেকটি ব্যবহার মানুষের জন্যে উপকার ডেকে আনে।
নিমপাতা খাওয়া বা এর ব্যবহার অনেক উপকারি। নিম পাতা দিয়ে গোসল
অনেক এক ধরনের প্রাকৃতিক উপায়, যা শরীর ত্বক এবং মানসিক সস্তি
দেয়। প্রাকিতিক এবং সাশ্রয়ী এই পদ্ধতি ত্বকের যত্নে সহজেয়
অন্তরভুক্ত করা যায়। আসুন বিস্তারিত জেনেনি নিম পাতা দিয়ে গোসল
করা সম্পর্কে।
ত্বকের রোগ প্রতিরোধঃ
- নিম পাতার অ্যান্টি-ব্যকটেরিয়াল গুণ ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ যেমনঃ চুলকানি, ফাঙ্গাল ইনফেকশন এবং র্যাশ দূর করে।
- ব্রন এবং একজিমার মতো সমস্যা দূর করে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ
- নিম পাতা দিয়ে গোসল করার ফলে শরীরের বাইরের সব জিবানু ধ্বংস হয়ে যায় এবং ত্বক থাকে জিবানুমুক্ত।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বাহ্যিক ভাবে
ঘাম ও দুর্গন্ধ দূর করেঃ
- শরীরের অতিরিক্ত দুর্গন্ধ এবং অতিরিক্ত ঘাম দূর হয়
- শরীরকে ঠাণ্ডা এবং সতেজ রাখে
ব্রন প্রতিরোধ করেঃ
- ত্বকের ছিদ্র থেকে ময়লা ও জিবানু দূর করে ফেলে ফলে ব্রন হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়
চুল এবং মাথার ত্বকের উপকারঃ
- নিম পাতা দিয়ে গোসল করলে চুলের খুশকি দূর হয় এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে
- চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে
ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করেঃ
- পা বা অন্যান্য অংশের ফাঙ্গাল ইনফেশন দ্রুত নিরাময় হয়
ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকেঃ
- নিম পাতা দিয়ে গোসল করলে ত্বকের শুষ্কতা কমে যায় এবং ত্বক মসৃণ এবং কোমল থাকে
আরামদায়ক ঘুমে সহায়তাঃ
- নিম পাতার পানির ঠাণ্ডা ও প্রশান্তিদায়ক প্রভাব মানসিক চাপ কমাতে এবং ভালো ঘুমে সহায়তা করে
ওপরের উপকারগুলো পেতে পারেন নিম পাতা দিয়ে গোসল করার ফলে।
তবে অবশ্যই সঠিক পদ্ধতি বা ব্যবহারবিধি অবলম্বন করে নিম পাতা
দিয়ে গোসল করতে হবে। প্রথমে ফুতন্ত পানিতে নিম পাতা ৫ থেকে
১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। পানি যখন সাধারন তাপমাত্রায় চলে
আসবে তখন সেই পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। নিম পাতার অনেক উপকার
রয়েছে এবং নিম পাতা দিয়ে গোসল করার মাধ্যমে আপনি অনেক উপকার
পেতে পারেন।
চর্ম রোগে নিম পাতার ব্যবহার
চর্ম রোগে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানবেন এই পোস্ট থেকে।
প্রাচিন কাল থেকে চর্ম রোগের জন্যে নিম পাতা ওষুধি বা চর্ম
রোগের চিকিৎসায় নিম পাতা ব্যবহার করা হচ্ছে। নিম পাতায় রয়েছে
অ্যান্টি-ব্যকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুনাগুণ যা চর্ম রোগ প্রতিরোধ বা
প্রতিকার করতে অনেক কার্যকরি। আসুন জেনেনি চর্ম রগে নিম পাতার
সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে।
ব্রন দূর করতেঃ
- নিম পাতা পানিতে সিদ্ধ করে নিন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে ওই পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
- ব্রন হওয়া স্থানে নিম পাতার পেস্ট লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রখে ধুয়ে ফেলুন
- এটি আপনার ত্বকের তেল কমাবে এবং ব্রনের জীবাণু ধ্বংস করে ফেলবে।
একজিমা বা র্যাশের সমস্যায়ঃ
- নিম পাতার পেস্ট বানিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান
- নিম পাতা দিয়ে পানি গরম করে সেই পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন
- এটি চুলকানি কমাবে এবং ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে
ফাঙ্গাল বা ইনফেকশন দূর করতেঃ
- আক্রান্ত স্থানে নিম পাতার পেস্ট লাগিয়ে রাখুন
- নিম পাতার সিধ পানি দিয়ে নিয়মিত পরিস্কার করুন
- এটি ফাঙ্গাল ইনফেকশন যেমন দাদ বা বা পায়ের ফাঙ্গাল সংক্রমণ দ্রুত নিরাময় করে
চুলকানি বা অ্যালার্জি কমাতেঃ
- নিম পাতার রস বের করে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে
- নিম পাতার পানি দিয়ে গোসল করুন
- এটি চুলকানি বা র্যাশ দ্রুত কমিয়ে দেয়
সোরিয়াসিসের জন্যেঃ
- নিম পাতার পেস্ট বা তেল ত্বকে সরাসরি ব্যবহার করুন
- নিম পাতার পানির সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে ত্বকে লাগান
- ত্বকের শুষ্কতা কমায় এবং পুন্রায় সংক্রমণ প্রতিরোধ করে
ত্বকের সংক্রমণ দূর করেঃ
- নিম পাতার পেস্ট সরাসরি সংক্রমিত স্থানে লাগান
- প্রতিদিন নিম পাতার তেল ব্যবহার করুন
- এটি জীবাণু ধ্বংস করে এবং ত্বককে সংক্রমণ মুক্ত রাখে
সঠিক ভাবে ব্যবহার করলে যেকোনো চর্ম রোগের জন্যে ভালো প্রভাব
ফেলবে এবং নিরাময় করতে সাহায্য করবে। তবে অবশ্যই সঠিক ভাবে
প্রতিনিয়ত এটি ব্যবহার করতে হবে। দীর্ঘ সময় নিম পাতা ত্বকে
ব্যবহার করার ফলে শুষ্কতা দেখা দিতে পারে ফলে আপনি
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকে অতিরিক্ত
ব্যাবহারের ফলে ত্বকে পারশপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে এজন্যে
চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করুন। নিম পাতা চর্ম রোগের জন্যে
প্রাকিতিক প্রতিষেধক হিসেবে খুব ভালো এবং কার্যকরি। নিয়মিত
সঠিক ভাবে ব্যাবহারের ফলে আপনি উপকার ভোগ করতে পারবেন।
এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার
এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানবেন এই পোস্ট থেকে।
নিম পাতা চিকিৎসার জন্যে প্রাচিন কাল থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে
এবং এলার্জির ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার হয় এবং সঠিক উপকার পাওয়া
যায়। এতে অ্যান্টি-ব্যকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি- এলার্জিকে ভরপুর, যা
এলার্জির উপসর্গ প্রশমনে অনেক কার্যকর। আসুন জেনেনি এলার্জিতে
নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে।
নিম পাতা দিয়ে গোসলঃ
- এক মুঠো নিম পাতা ফুতন্ত পানিতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সিদ্ধ করুন
- পানি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসলে সেটি দিয়ে গোসল করুন
- ত্বকের চুলকানি ও প্রদাহ প্রশমিত করে এবং জিবানুমুক্ত রাখে
- এলার্জির কারণে সৃষ্ট র্যাশ এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে
নিম পাতার পেস্ট প্রয়োগঃ
- কিছু তাজা নিম পাতা নিয়ে ধুয়ে পেস্ট তৈরি করুন
- পেস্টটি সরাসরি আক্রান্ত স্থানে লাগান
- ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
- এটি প্রদাহ কমায় এবং তক্র লালচে ভাব দূর করে
- চুলকানি প্রশমিত করতে সাহায্য করে
নিম পাতার রসঃ
- তাজা নিম পাতা থেকে রস বের করে নিন
- রসটি তুলার সাহায্যে আক্রান্ত স্থানে লাগান
- এটি দ্রুত আরাম দেয় এবং এলার্জির সংক্রমণ ছড়াতে বাধা দেয়
- নিম পাতার রস তৈরি করে তার মধ্যে নারকেল তেল মেশান
- মিশ্রনটি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখুন
- ত্বককে ময়েশ্চরাইজ করে এবং শুষ্কতা কমায়
- এলার্জি থেকে সৃষ্ট প্রদাহ দ্রুত কমিয়ে দেয়
নিম পাতার তেল ব্যবহারঃ
- নিমের তেল তুলার সাহায্যে ত্বকের এলার্জি আক্রান্ত অংশে লাগান
- দিনে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করুন
- এটি ব্যকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাল ধ্বংস করে এবং ত্বক দ্রুত ভালো হতে সাহায্য করে
ওপরের উপায়গুলো অবলম্বন করে এলার্জি সমস্যা দূর করতে পারবেন।
তবে অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে দূরে থাকবেন কারণ এর ফলে
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। গর্ভবতি নারি বা যাদের
নিম পাতা ব্যাবহারের ফলে এলার্জি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে তারা
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। তবে সঠিক ভাবে নিয়মিত
ব্যাবহারের ফলে নিম পাতা আপনার ত্বকের এলার্জি কমাবে এবং
ত্বককে আরও সুস্থ করে তুলবে।
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানবেন এই পোস্ট থেকে।
শতাব্দী থেকে শতাব্দী ধরে ওষুধি গুনের পরিচিত এবং প্রাকিতিক
চিকিৎসায় ব্যবহিত হচ্ছে এই নিম পাতা। শারীরিক বিভিন্ন
সমস্যায় এবং মানসিক প্রশান্তির জন্যেও নিম পাতা ব্যবহার করা
হয়। নিম পাতা অত্যান্ত কার্যকর। তবে এতো উপকার বা গুনাগুনের
পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে যা সঠিক ভাবে জানা
অত্যান্ত জরুরি। সঠিক ভাবে নিম পাতা না ব্যবহার করলে এর
নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিতে পারে। নিচে নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
আলোচনা করা হয়েছে।
- অতিরিক্ত বাবহারে বিষক্রিয়াঃ নিম পাতায় থাকা কিছু উপাদান বেশি বাবহারে বা বেশি পরিমানে গ্রহন করলে বিষক্রিয়া ঘোটতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় ঝুঁকিঃ গর্ভবতি নারিদের নিম পাতা ব্যবহার করা ঠিক নয় এতে গর্ভপাতের আশঙ্কা থাকে এবং ভ্রুনের ক্ষতিও হতে পারে।
- লিভারের সমস্যাঃ দির্ঘ মেয়াদে নিম পাতা বা নিম তেল সেবন করলে লিভারের কার্যখমতা কমে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে
- বাচ্চাদের জন্যে ঝুঁকিপুর্নঃ বাচ্চাদের জন্যে নিম পাতা বিপজ্জনক হতে পারে। এটি মস্তিষ্কের ক্ষতি বা ঘন ঘন খিচুনি ঘটাতে পারে।
- অ্যালার্জিঃ অনেকের সেনসিটিভ ত্বক থাকে ফলে নিম পাতার সংস্পর্শে আসলে অ্যালার্জি বা র্যাশ হতে পারে।
- রক্তচাপের সমস্যাঃ নিম পাতা রক্ত চাপ কমাতে সহায়ক, কিন্তু যাদের নিম্ন রক্তচাপ তাদের জন্যে এটি ঝুকিপুর্ন হতে পারে।
- রক্তে শর্করা কমানোঃ নিম পাতা রক্তে শর্করা কমাতে পারে। তবে ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণকারিদের ক্ষেত্রে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমিয়ে দিতে পারে, যা শরীরের জন্যে বিপজ্জনক হতে পারে।
নিম পাতা আমাদের জন্যে অনেক উপকারি তবে সঠিক ভাবে ব্যবহার না
করলে বা অতিরিক্ত বাবহারে এর খারাপ প্রভাব পরতে পারে। এজন্যে
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিম পাতা ব্যবহার করা উচিত। যদিও
ব্যবহার করেন তাহলে নিয়ম মেনে স্বল্প পরিমানে ব্যবহার করা
উচিত। অতিরিক্ত বাবহারে সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিম পাতা
ব্যাবহারের পর শরীরে অস্বাভাবিক কোন প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে
দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। সঠিকভাবে এবং সঠিক
পরিমানে নিম পাতা ব্যবহার আমাদের উপকারি, তবে অসতর্ক বাবহারে
এটি ক্ষতির কারণ হতে পারে।
লেখক মন্তব্যঃ নিম পাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এই পোস্ট
থেকে। নিম পাতা একটি ওষুধি গাছ যা প্রাচিনকাল থেকে মানুষ
ব্যবহার করে আসছে এবং সঠিক গুনাগুনের ফলে উপকৃতও হচ্ছে। তবে
এর উপকার দিক গুলো শুনে যদি বেশি বেশি ব্যবহার শুরু করে
তাহলে ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে। নিয়ম মতো ব্যবহার করলে
শরীরের অনেক উপকার পাবেন, তবে অতিরিক্ত ব্যবহার করলে শরীরে
নানা সমস্যাও হতে পারে।
প্রাচিনকাল থেকে আধুনিক বিজ্ঞানেও নিম পাতার উপকারি দিক
সম্পর্কে বলা হয়েছে। সর্বচ্চ মাত্রায় উপকার পেতে হলে অবশ্যই
উপযুক্ত এবং সঠিক ব্যবহার করতে হবে। আপনি চাইলে চিকিৎসকের
পরামর্শ নিয়ে নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন বা যদি কোন সমস্যা
হয় নিম পাতা ব্যাবহারের পর তাহলেও চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ
করতে পারেন। নিম পাতা আমাদের জন্যে প্রকিতির একটি আশির্বাদ
তবে সঠিক বাবহারে। ধন্যবাদ পাঠক।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url